কাকরাইলের চিঠি ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

তারিখঃ ২৮/০২/২৫ ইং

বিসমিহি তা'য়ালা

মোহতারামীন ও মোকাররামীন আহলে শুরা হাযরাত ও কামকরনেওয়ালা জিম্মাদার সাথীগণ- সকল জেলা ।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু,

পবিত্র রমজান মাস আগত প্রায়, এই মাসের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য রমযানের ২ মাস পূর্ব থেকে অর্থাৎ রজব মাস থেকেই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দোয়া করতেন 'হে আল্লাহ্ আপনি আমাদেরকে রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করেন এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াতকে বাড়িয়ে দেন'। এ মাসে জাহান্নামের দরজাকে বন্ধ করে দেয়া হয়, বনি আদমের চির শত্রু শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় ও জান্নাতকে সুসজ্জিত করে তার দরজা সমূহ রোজাদার বান্দাদের জন্য খুলে দেয়া হয়। সকল ফেরেশতাদের সরদার হযরত জিবরাঈল (আঃ) এ দোয়া করেছেন- যে ব্যক্তি রমযান পেল আর তার গোনাহকে মাফ করাতে পারলো না তার ধ্বংস হোক, আর হুজুর সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দোয়া উপর আমিন বলছেন। তাই রমযানের প্রতিটি মুহুর্তকে কাজে লাগানো দরকার। রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে বিশেষ করে কোরআন তেলাওয়াতের এহতেমাম করতেন। প্রিয় রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওফাতের বছরে রমযান মাসে স্বয়ং হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর সাথে কোরআন পাক ২ বার দাওর করেন ।

হযরতজী মাওলানা ইউসুফ সাহেব (রহঃ) ফরমান, আল্লাহ্ পাক রমজান মাসে রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রিয় সাহাবাকেরাম (রাঃ) গণের বদরের যুদ্ধের মেহনত ও মোজাহাদা ওয়ালা সফরের দ্বারা গায়েবী শক্তি অর্থাৎ ফেরেশতাগণের অবতারণা ঘটিয়েছেন এবং সমস্ত আরব গোত্রগুলোকে ইসলামে দাখিল করার সফর 'মক্কা বিজয়' এই মোবারক মাসেই হয়েছিল। তাই এই মোবারক মাসে মেহনত, মোজাহাদা, আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় নকল হরকত ও রাতের দরদভরা দোয়া মানুষের অন্তরকে ব্যাপক ভাবে হকের দিকে ফিরিয়ে আনে।

আল্লাহ্ পাকের বে এনতেহায়ী ফযল ও করম যে গত ১৩ ই শাবান হতে অদ্য (২৮ শে শাবান) পর্যন্ত কাকরাইল ও টঙ্গী টিন শেড মসজিদ হতে সর্বমোট ২০৪৭ জামাত চিল্লা/ ৩ চিল্লার জন্য আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের হয়েছে এবং এ সমস্ত জামাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাদ্রাসার তোলাবা ও আসাতেজা কেরাম রয়েছেন, যা আপনাদের মেহনতের ফসল। আপনারা অবগত আছেন যে ইতিমধ্যে সরকার সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা গুলো প্রায় ৪০ দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে- এ মওকাকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ ছাত্র ও শিক্ষকদের পিছনে মেহনত করে আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করার জন্য জানতোর মেহনত করা বহুতই জরুরী। আপনারা অবগত আছেন যে, গত পুরানোদের জোড়ে বড়রা ছাত্র-শিক্ষকদের পিছনে মেহনত করার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন। সবাই ছাত্র-নওজোয়ানদের চায়, আল্লাহ পাক নওজোয়ানদেরকে চান। নওজোয়ানদের আল্লাহ পাকের কাছে বিশেষ মাকাম আছে। যে সমস্ত নওজোয়ান যুবক বয়সে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকেন তাদের আল্লাহ পাক আরশের নিচে স্থান দিবেন। আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমান- আমি নওজোয়ানদের দ্বারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছি । হিজরতের মওকায় রোজানা ৫০০ নওজোয়ান মদিনা মনোয়ারাতে হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এস্তেগবালের জন্য অপেক্ষা করতেন। আমরা যদি এই আহাম তবকার উপর মেহনত না করি তারা বাতিলের শিকার হতে পারে ও ভবিষ্যতে দ্বীনের কামের জন্য রোকাওয়াট বনার আশঙ্কা রয়েছে। খাস করে শিক্ষক তবকার মধ্যে আল্লাহ্ পাকের আহকামাত ও রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তরিকা জিন্দা হলে ছাত্র সমাজের উপর এর প্রভাব পড়ে। তাই প্রতিটি জেলায় যে ছাত্র-শিক্ষকদের দেখভালের যে জামাত আছে উক্ত জামাত কে সম্পৃক্ত করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকদের নিকটে, মেস সমূহে ও মসজিদের আশে পাশে অবস্থানরত ছাত্রদের কাছে গাস্ত করে আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করলে বহুতি ভালো হয়।

আগামী ত্রি মাসিক মাশওয়ারা ১৪ ও ১৫ ই মার্চ, ২০২৫ এর পরিবর্তে ৪ ও ৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে (শুক্রবার ও শনিবার) কাকরাইল মসজিদে হবে ইনশাআল্লাহ্। মাশওয়ারার প্রথম আমল শুক্রবার সকাল ৯.৩০ মিনিটে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ্ ।

সকল সাথীদের কাছে সালাম ও দোয়ার দরখাস্ত ।


আরজগুজার
হযরত মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের
আহলে শুরা, তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ
কাকরাইল, রমনা, ঢাকা-১০০০।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url