ত্রি মাসিক মাশওয়ারার ফয়সালা সমূহ মে ২০২২

ত্রি মাসিক মাশওয়ারার ফয়সালা সমূহ মে ২০২২
ত্রি মাসিক মাশওয়ারার ফয়সালা সমূহ মে ২০২২
১. আলমী ফিকিরঃ

বিদেশের জন্য জামাত পাঠানো খুবই জরুরী। হযরতজী মাওলানা এনামুল হাসান সাহেব রহঃ এক মওকায় আমাদের হাজী আব্দুল মুকিত সাহেব রহঃ কে বলেছিলেন তোমরা যত এহতেমামের সাথে বিদেশে জামাত পাঠাবে তত বেশী বিদেশ থেকে তোমাদের দেশে সারা বছর মেহমান আসবে। এজন্য জেলার জিম্মাদার সাথীরা ফিকিরটা মাথায় নেয়া, কারণ ফিকির মাথায় নিলে কাজ অজুদে আসে। তাই গুণগত মান সম্পন্ন জামাত তৈরি করার জন্য সিফত ওয়ালা সাথীদের দিয়ে জামাত বানিয়ে জেলার অস্থায়ী জামাত তাদের সাথে বার বার বসে মাসায়েল হাল করে কাকরাইলে পাঠানোর কোশেষ করা।

২. হজ্জ মেহনতঃ

হাজী সাহেবানরা আমাদের দেশের প্রতিনিধি। আমাদের জন্য উনারা রহমত ও বরকত নিয়ে আসবেন। এ জন্য খোজ খবর নিয়ে একই এজেন্সির মাধ্যমে হলে জামাত বানানোর চেষ্টা করা যার মধ্যে ২/১ জন পুরান হাজী হওয়া মুনাসেব এবং এই চেষ্টা করা যাতে করে হাজী সাহেবানরা হজ্জ থেকে ফিরে এসে কম বেশী ওয়াক্ত লাগান। হজ্জ প্রশিক্ষণ ওলামায়ে কেরামদের তরফ থেকে দেয়া মুনাসিব।

৩. জেলার সকল কাম করনেওয়ালা সাথীদের খুরুজের তরতীবঃ

মসজিদওয়ার আজাইম নিয়ে ২/৩ জনকে বুনিয়াদ বানিয়ে জামাত পুরা করার জানতোড় কোশেষ করা, যাতে করে পূর্বের মত মসজিদওয়ার চিল্লা/ ৩ চিল্লার জামাত বের করার রেওয়াজ চালু হয়। নিজ মসজিদে জামাত পুরা না হলে কয়েক মসজিদ মিলে জামাত পুরা করা। জেলা বা থানা পর্যায়ে বড় মজমা করে আজাইম নিলে তা কাগজেই থেকে যায়।

৪. বছরের শুরু থেকে মাদ্রাসা মেহনতের এহতেমামঃ

দাওয়াতের এ মেহনত হল সম্মিলিত ওলামা কেরামদের মেহনত ও ফিকিরের ফসল। তাই এলেম ও আহলে এলেমদের আজমত ও মহব্বতকে বজায় রেখে বছরের শুরু থেকে মেহনতকে জারী রাখা। এ জন্য দুই ধরনের মেহনত করা; এক, হাঙ্গামী সুরতে মেহনত – যা হচ্ছে বছরে কখনও কখনও মজমা করে তাশকিল করা আর দায়েমী মেহনত হলো মাদ্রাসার আশপাশের মহল্লাওয়ালাদের ফিকিরবান করা যাতে তারা মাদ্রাসার মুহতামিম, নাজেমে তালিমাত ও মেহনত নিয়ে চলনেওয়ালা আসাতেজায়ে কেরামদের সাথে তায়াল্লুক কায়েম করে তাদের মাতাহাতে তোলাবাদের উপর মুসালসাল মেহনত চালু রাখেন। কেননা তোলাবাদের পিছনে মেহনত মাদ্রাসার আসাতেজায়ে কেরামদের নিগরানীতেই হবে।

৫. ফারেগীন ওলামায়ে কেরামদের উপর মেহনতঃ

ফারেগীন ওলামায়ে কেরামদের সালে বের করার জন্য নিয়ত ও হিম্মত আফজায়ী করা এবং তাদের অভিভাবকদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে মাসায়েলকে হাল করে সালে বের করার কোশেষ করা। তাছাড়া যারা সালে চলছেন সারা বছর তাদের খোজ খবর নেয়া, বিশেষ করে যখন কাকরাইলে আসেন ও রোখে যান।

৬. জেলায় জেলায় ওলামা হাযরাত গণের জোড়ঃ

জেলায় জেলায় ওলামা হাযরাত গণের জোড় হওয়াই দরকার। এজন্য কাকরাইলে অবহিত করে জোড়ের তারিখ ঠিক করা, বড়রা যথা সম্ভব জোড়ে শিরকত করার চেষ্টা করবেন।

৭. এস. এস. সি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের উপর মেহনতঃ

এখন থেকে এস. এস. সি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের মসজিদওয়ার লিষ্ট বানিয়ে তাদের সঙ্গে মোলাকাত করা ও অভিভাবকদের জেহেন বানানো। পরীক্ষার আগে কোন মওকায় দোয়ার জন্য একত্রিত করে অভিভাবকসহ তাশকিল করা। কারন জীবনের শুরুতে দ্বীনি জেহেন বনলে সারা জীবন তার আছর বাকী থাকে। জামাতগুলোতে ছাত্রসংখ্যা বেশি না হওয়া, মুনাছেব জিম্মাদার ও সাথী দেয়া এবং যেখানে জামাত যায় ঐ এলাকার সাথীরা বারী বারী করে জামাতের সাথে থেকে নুসরত করার এন্তেজাম করা।

৮. জেলায় প্রতি বছর ৪ মাসের এক মজমা তৈরীর করা প্রচেষ্টাঃ

জেলায় বিভিন্ন মওকায় বছরে ৪ মাস লাগানোর এর উপর জোর তরগীব দেয়া, তাদের আলাদা রেজিষ্ট্রার করা, মওকা মহল দেখে মার্কাজে একত্রিত করে ৩ চিল্লার জন্য বের হওয়ার তরতীব ঢালা, ওয়াক্ত ১ চিল্লা করে দিবে নাকি একত্রে দিবে ইত্যাদি। কতজন বছরে ৪ মাসের তৈরী হল তা আগামী ত্রি মাসিক জোড়ে কারগুজারী শুনানো।

৯. জেলার প্রতিটি মসজিদে ৫ কাজ চালু করার চেষ্টা করাঃ

মাসিক লম্বা মাশওয়ারা, ২য় গাস্ত, ৩ দিনের জামাত, চলতি জামাত, রোজানা ওয়াক্ত দেনেওয়ালা সাথীদের দ্বারা জেলা/ হালকায় দূর্বল মসজিদ ও আংশিক ৫ কাজের মসজিদগুলোকে সবল মসজিদে পরিণত করার চেষ্টা করা।

১০. হালকার লম্বা মাশোয়ারায় নিম্নলিখিত বিষয়ের এহতেমাম করাঃ

  • হালকার মাসিক জোড় না বলা বরং পরামর্শ বলা।
  • শবগুজারীর বদল না বলা।
  • হায়াতুছ সাহাব না পড়া ও দোয়া না করা।
  • খানা পিনার ইন্তেজাম না করা। (ইজতেমায়ীভাবে)।
  • হাজিরি না নেয়া।
  • সবল - দূর্বল মসজিদ চিহ্নিত করার জন্য কারগুজারী নেয়া।
  • সবল মসজিদকে দূর্বল মসজিদের দায়িত্ব দেয়া।
  • তারগীব দেয়া, তাশকীল করা, নজমের তরতীব করা।
  • আজাইম নেয়া।

১১. দুর্বল জেলাগুলোকে সবল করার জন্য মেহনতঃ

দূর্বল ৮টি জেলায় ( মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান) কাজকে আগে বাড়ানোর জন্য আপনাদের জেলা থেকে এবং ঢাকার হালকা থেকে মজবুত ২/১টি জামাত চিঠিসহ কাকরাইলে পাঠানোর এহতেমাম করা।

১২. মাস্তুরাতের মেহনতঃ

মাস্তুরাতের কাজ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জেহেন বনলে পুরুষদের দ্বীনের কাজে মদদ হবে। এজন্য জেলার অস্থায়ী জামাতের মাধ্যমে প্রত্যেক মাশওয়ারাতে মাস্তুরাতের উমূরকে গুরুত্বের সাথে নেওয়ার চেষ্টা করা। মেহনতকে আগে বাড়ানোর জন্য ৩ দিন থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত যারা সময় লাগিয়েছেন তাদের পুরুষদের লিষ্ট বানিয়ে ১০/১৫ দিন চিল্লা ও বিদেশের জন্য বের করার কোশেষ করা এবং শত ভাগ মুসলমানদের ঘরে তা'লীম চালু হয় সেজন্য মহল্লার সাপ্তাহিক ইজতেমায়ী তালীম চালু করে মহল্লার সকল মাস্তুরাতদের জোড়ানোর বিশেষ এহতেমাম করা ।

১৩. তবকাওয়ার মেহনতঃ

প্রতিটি জেলায় অস্থায়ী জামাত বানিয়ে সকল তবকার উপর মেহনত করা জরুরী-

ক. গোরাবাদের পিছনে মেহনতঃ

ইসলামের শুরুতে গোরাবা তবকাই ইসলাম কবুল করেছেন এবং তাদের জীবন সহজেই পাল্টে যায়। আহলে বাতেল তাদের মাকছাদে গোরাবাদের ব্যবহার করে তাই আমরা তাদেরকে নিলে তারা হকের মেহনত করবে অন্যথায় তারা বাতেলের শিকার হবে।

খ. ছাত্র- নওজোয়ানদের উপর মেহনতঃ

প্রত্যেক জেলায় ছাত্রদের দেখভালের জামাত নিয়মিত মাশওয়ারায় বসে জেলার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের পড়ালেখা শেষে ৪ মাসের জন্য বের করার জন্য জানতোড় মেহনত করা তাছাড়া শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্রদের জোড় করে কাজের সাথে জোড়ানোর চেষ্টা করা এবং শিক্ষাবর্ষের শেষে জোড় করে পরীক্ষার পর আল্লাহপাকের রাস্তায় কমবেশী সময়ের জন্য তাশকিল করা। নওজোয়ান তবকার উপর মেহনত করে মসজিদে আমলে জোড়ার চেষ্টা করা ও আল্লাহর রাস্তায় বের করার ফিকির করা।

গ. খাওয়াছ তবকার উপর মেহনতঃ

জেলার অস্থায়ী জামাতের মাধ্যমে রাজনীতিবীদ, ব্যবসায়ী, সরকারী চাকুরীজীবী, আইনজীবী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি তবকার উপর মেহনতকে বাড়ানো ।

ঘ. বধীর ভাইদের উপর মেহনতঃ

প্রতি জেলায় বধির ভাইদের তরজমান বাড়ানোর ব্যবস্থা করে শবগুজারীর মওকায় বয়ানের এন্তেজাম করা। তাছাড়া কম বেশি আল্লাহর রাস্তায় বের করার জন্য চেষ্টাও করা।

১৪. মেহনতকে সহি নেহেজে রাখার প্রচেষ্টাঃ

আমাদের এই মেহনতকে সাহাবাদের নেহেজে রাখর জন্য সবাই মিলে চেষ্টা করা। এ জন্য নতুন নতুন আসবাব থেকে পরহেজ করা। কারণ এগুলোর দ্বারা বাতেল চৌকান্না হয় এবং বাতেলের সাহায্য করা হয়, যা দ্বীনের কাজের রোকাউট বনে। হযরতজী মাওলানা ইলিয়াছ সাহেব রহঃ বলতেন, আমাদের এই কাজ ১০০ ক্রোশ আগে থাকবে এবং প্রচার ১০০ ক্রোশ পিছে থাকবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url