কাকরাইলের চিঠি নভেম্বর ২০২৪

বিসমিহি তা'লা

বাংলাদেশ টংঙ্গী ইজতেমার দাওয়াতনামা ও আসন্ন ইজতেমার তারিখ ৩১ শে জানুয়ারী, ০১, ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

মোহতারামীন ওয়া মোকাররামীন শুরা আহবাব/জিম্মাদার হাযরাত/প্রবাসী ভাইগণ/সকল দেশ ।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আশা করি আল্লাহ পাকের মেহেরবানীতে ভাল আছেন ও দ্বীনের মোবারক মেহনতে মশগুল আছেন।

সারা দুনিয়ার সকল মানুষের দুইটি জিন্দেগী এক দুনিয়ার জিন্দেগী যাহা ক্ষনস্থায়ী আর দ্বিতীয় জিন্দেগী হইতেছে আখিরাতের জিন্দেগী যাহা মৃত্যুর সাথে সাথে শুরু হবে যার কোন শেষ নাই। রাসুল-এ পাক (সাঃ) মানুষের জিন্দেগীর হাকিকত বর্ননা করতে গিয়ে মহান আল্লাহপাকের পয়গাম পৌছিয়েছেন যে “আমি সমস্ত দুনিয়াকে সৃষ্টি করেছি মানুষের কল্যাণের জন্য আর মানুষকে সৃষ্টি করেছি আখিরাতের জন্য”। তাই আল্লাহর রাসুল (সাঃ)-এর সোহবতে থেকে হাযরাতে সাহাবা (রাযিঃ) আজমাইনদের একমাত্র এরাদা ও আজাইম ছিলো আখিরাত “ইন্নামা হেমামুনা আল্ আখিরাত ”।

দুনিয়া ও আখিরাতের জিন্দেগীতে প্রকৃত সফলতা অর্জন করার জন্য আল্লাহপাক দ্বীন দিয়েছেন। দ্বীন হচ্ছে আল্লাহপাকের আহকামাতসমূহ রাসুল (সাঃ)- এর মোবারক তরিকায় পুরা করার নাম। এই দ্বীনের অন্যতম ও মৌলিক বিষয় হচ্ছে আল্লাহপাক আমাদের একমাত্র রব। তিনি শুধু মাত্র এই কায়েনাতকে সৃষ্টিই করেন নাই বরং এর একমাত্র নিয়ন্ত্রক। আমরা চোখে যাহা কিছু দেখি তা মাখলুক। সমস্ত মাখলুক সবসময় সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রণে । তিনি সবকিছু গায়েব থেকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে রাসুল(সাঃ) সাহাবা(রাযিঃ) আজমাইনগণকে ঈমানের এই শিক্ষার আলোকে তাদের একীনকে সুদৃঢ় করেছেন। হাযরাতে সাহাবা(রাযিঃ) আজমাইন এর নিকট ঈমানের মূল্যবোধ এতটাই প্রবল ছিলো যে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাইফা(রাযিঃ) পুরা রাজত্বের বিনিময়ে এক মুহুর্তের জন্যও ঈমান ছাড়েননি ।

আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী রাসুলদের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াতের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। যেহেতু আমরা শেষ নবীর উম্মত, রাসুল(সাঃ) ওফাতের পর আর কোন নবী আসবেন না; এই জন্য আল্লাহ তা'লা এই উম্মতকে দাওয়াতের কাজের জিম্মাদারী দান করে “বেহতেরীন উম্মত” হিসাবে সম্বোধন ও সম্মানীত করেছেন। হাযরাতে সাহাবা(রাযিঃ) আজমাইন এই কাজের জিম্মাদারীকে উপলব্ধি করে ঈমানের আলোকে, নামাজকে কায়েম করতঃ, এলেম ও জিকিরের রওশনিতে, নবীওয়ালা আখলাকের সাথে একমাত্র আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়ার আনাচে-কানাচে ফিরেছেন। হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাযিঃ) মদিনা মনোওয়ারার সাহাবী তুরষ্কের ইস্তাম্বুল শহরের নিকটে আরাম করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি কামকরনেওয়ালা সাথীদের সালানা, মাহানা খুরুজ এর তরতীব করা এবং সাথে সাথে সকল মসজিদে মোকামি কাম জিন্দা করার অক্লান্ত চেষ্টা করা জরুরী।

কাকরাইলের চিঠি ১৭ নভেম্বর ২০২৪
কাকরাইলের চিঠি ১৭ নভেম্বর ২০২৪
আলহামদুলিল্লাহ, হাযরাতে সাহাবায়েকেরাম(রাযিঃ) এর অনুকরণে পুরা মানব জাতির মধ্যে পরিপূর্ন দ্বীন ও দ্বীনের মেহনত জিন্দা করার জন্য যে টুটা ফাটা মেহনত হচ্ছে তার অংশ হিসেবে অন্যান্য বছরের ন্যয় ইনশাআল্লাহ আগামী ৩১ শে জানুয়ারী এবং ১, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে টঙ্গীতে ইজতেমা হবে। ইন্দো-পাক ও বাংলাদেশের শুরাই নেজামের আকাবেরীন হাযরাতগণ এবং সারা দুনিয়ার ওলামায়েকেরাম এবং সকল সাথীগণ ইজতেমায় শিরকত করবেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হাযরাতে সাহাবা(রাযিঃ) আজমাইন যেমন এই কাজের জিম্মাদার ছিলেন অনুরুপভাবে আমানতদারও ছিলেন। যেভাবে রসুলুল্লাহ(সাঃ) কাছ থেকে দ্বীন শিখেছিলেন ও দেখেছিলেন তাহা হুবহু পরবর্তীওয়ালাদের কাছে পৌঁছিয়েছেন। নিজের তরফ থেকে কোনরূপ সংযোজন-বিয়োজন বা পরিবর্তন করেননি। অনুরুপভাবে আজ প্রতিটি কাম করনেওয়ালা সাথীদের এটা বড় আমানতদ্বারী যে, তিন হযরতজী- হযরত মাওলানা ইলিয়াস সাহেব (রঃ), হযরত মাওলানা ইউসুফ সাহেব(রঃ) ও শেষ হযরতজী মাওলানা এনামুল হাসান সাহেব(রঃ) যেভাবে বিগত ৭০/৭৫ বছর যাবত কাজের তরতীব সারা দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং যাহা সর্বত্র সমাদৃত হয়েছে তাহা আলমী শুরার পরামর্শে সারা দুনিয়াতে উযুদে আনার জন্য বর্তমানে রাইবেন্ড ও টঙ্গী ইজতেমাই একমাত্র মওকা।

তাই, এখন থেকে মেহনত করে আপনাদের দেশ থেকে চিল্লা/তিন চিল্লার জামাত কসরতের সঙ্গে পাঠানের চেষ্টা করা যাতে ইজতেমার পূর্বের মেহনতে শরিক হতে পারেন। কমছেকম ইজতেমায় শরিক হয়ে চিল্লা/তিন চিল্লার জন্য আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার এহতেমাম করলে বহুতি ভাল হয়। এই চিঠির কপি আপনাদের আশপাশের শহরে পাঠানোর অনুরোধ রইল । এই ব্যাপারে কাকরাইলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ই-মেইল আইডি নিম্নে দেওয়া হইল । ই-মেইলঃ [email protected]

সকল সাথীদের প্রতি সালাম ও দোয়ার দরখাস্ত রইল ।

আরজগুজার,
মোহাম্মদ যোবায়ের,
খতিব ও প্রিন্সিপাল, মাদ্রাসা উলুমি দীনিয়া মালওয়ালী মসজিদ,
আহালে শুরা, তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ ও
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ তাবলীগ মার্কাজ ট্রাষ্ট, কাকরাইল, ঢাকা ।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
১. ইজতেমার ময়দানে শীতের পর্যাপ্ত পরিমাণ সামানা নিয়ে আসলে বহুতি ভাল হয় ।

২. প্রবাসী ভাইগণ মেহেরবানি করে ব্যাক্তিগত অতিরিক্ত সামানা ইজতেমার ময়দানে না নিয়ে আসলে ভাল হয় ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url