সাপ্তাহিক এজতেমায়ী তালিমের বিশেষ কিছু উসুল

মহল্লার সাপ্তাহিক তালিম মসজিদওয়ার জামাতের তালিম। যেই সকল মসজিদের সমন্বয়ে এই তালিমের ফয়সালা হয়েছে সেই সকল মসজিদের সাথীগণ মাশওয়ারায় উপস্থিত থাকবেন।

তালিম সুষ্ঠুভাবে চালানোর জিম্মাদারী মহল্লার মসজিদওয়ার জামাতের সাথীদের। তাই মাশওয়ারার সাথে তালিম চালানো। মাশওয়ারায় নিম্নের বিষয়গুলি তায় হওয়াঃ

১) কে কে এস্তেকবাল করবেন,

২) কে কে কিতাব পড়বেন,

৩) কে ছয় সিফত বলিবেন ও 

৪) তাশকিল করিবেন।

এক/দেড় মাস অন্তর মোনাসেব পুরুষ দ্বারা বয়ান করানো। মাস্তুরাতে সময় লাগাইয়াছেন এইরকম সাথী দ্বারা বয়ান করানো মোনাসেব। বয়ান কে করিবেন তা মহল্লার মাশওয়ারায় তায় হওয়া। তবে কখনও কখনও হালকার মাশওয়ারায়ও তায় হতে পারে।

এই তালিমে ফাজায়েলের কিতাব হইতে পড়া। অর্থাৎ ফাজায়েলে আমল, ফাজায়েলে সাদাকাত ও হজ্বের মওকায় ফাজায়েলে হজ্ব হতে পড়া।

পুরুষদের তরফ হতে বয়ানের পর পুরুষই দোয়া করবেন। আমল শেষে মাস্তুরাতগণ ইনফেরাদীভাবে মজলিশ শেষের দোয়া পড়ার অভ্যাস করবেন, এজতেমায়ীভাবে দোয়া করবেন না ।

এই তালিম সংশ্লিষ্ট সব কয়টি মসজিদের আওতাধীন এলাকার মাস্তুরাতগণ এই তালিমে জুড়বেন। এই তালিমে মাস্তুরাতগণ সাদাসিধা পোষাকে আসবেন। অলংকারাদী ব্যবহার করা হইতে পরহেজ করবেন।

কোন অবস্থাতেই কোন মাস্তুরাত দাড়িয়ে দাওয়াত দিবেন না, তালিম করবেন না, তাশকিল করবেন না । উঁচু জায়গায় বসা হতেও বাঁচিয়া থাকবেন।

বয়ান বা মোজাকারার শেষে ঘর প্রতি একজন লোককে আল্লাহর রাস্তায় বের করার এবং মাস্তুরাত সহ জামাত তৈরি করার তরগীব দিবেন। তাশকিল শেষ হবার সাথে সাথেই মাস্তুরাতগণ নিজ নিজ ঘরে তাশরিফ নিয়ে যাবেন।

এই তালিমে শরীক হবার জন্য যে সমস্ত মাস্তুরাতগণ আসেন তাদের জরুরতের জন্য পানির এন্তেজাম রাখবেন। খানাপিনার কোন নিয়ম চালু করবেন না। অনুরুপভাবে কেনা-বেচা ও হাদিয়া-তোহফার লেনদেন করবেন না। কোন প্রকার লিফলেট, বই বিতরণ করবেন না।

এজতেমায়ীভাবে মাসালা- মাসায়েলের আলোচনা করবেন না। ভিন্ন জেহেনের কোন মাস্তুরাত আসলে তাকে আমলের সুযোগ না দেওয়া। বরং মসজিদের মাশওয়ারায় যাহাদের আমলের ফয়সালা হয় তাদের দ্বারাই আমল করানো। তালিমের সময় বাসার পুরুষগণ ঘরের বাইরে থাকবেন ।

মাস্তুরাতগণ একসাথে দলবদ্ধ হয়ে বড় কোন রাস্তা দিয়া আসবেন না। পর্দার সাথে আসবেন। উত্তম হলো মাহরামের সাথে আসবেন। ৮ হইতে ১০ মিনিটের রাস্তা হলে আসবেন।

পর্দার খেলাফ কেহ আসলে তাকে কটাক্ষ করিয়া কিছু বলবেন না। বাচ্চা নিয়া আসবেন না, বাচ্চা নিয়া আসলে মাস্তুরাত নিজেই সামলাইবার ব্যবস্থা করবেন।

ঘরওয়ালাদের মধ্যে এস্তেকবালের মেজাজ হওয়া। ঘরওয়ালারা সফরে গেলে মাশওয়ারা করিয়া ঘরের চাবি রেখে যাওয়া।

পুরুষের বয়ানে হাসানো, কাঁদানো ও লজ্জাজনক কিছু না বলা। কুরআনের আয়াত সুর দিয়া না পড়া। বয়ানের সময় বয়ান করনেওয়ালার সহিত কয়েকজন পুরুষ সাথী থাকা।

মাঝেমধ্যে প্রত্যেক পুরুষ তাঁহার মাস্তুরাত হতে কারগুজারী নিবেন। উসুলের খেলাফ কিছু পাওয়া গেলে যে সপ্তাহে পুরুষের পক্ষ হতে বয়ান হবে বয়ান করনেওয়ালার সামনে রাখবেন যাতে তিনি ঐ বিষয় মোজাকারা করে দিতে পারেন।

তালিমের শেষে যে তাশকিল হয় সেই পর্চা মসজিদে পাঠাবেন। মসজিদওয়ার জামাত গাশতের মাধ্যমে তাদেরকে নগদ বের করার কোশেশ করবেন।

Next Post Previous Post