ত্রি মাসিক মাশওয়ারার ফয়সালা সমূহ অক্টোবর ২০২৪
১) আলমী ফিকির ও বাহির মূলকের জামাত তৈরী করাঃ
আল্লাহ্ পাকের মেহেরবাণীতে পাঁচ মহাদেশে বাংলাদেশি জামাতের বহুতি তাকাজা। টঙ্গী ইজতেমাও সন্নিকটে। হযরতজী রহঃ ফরমান আমরা যত বিদেশে জামাত পাঠাবো ততো বিদেশ থেকেও জামাত আমাদের দেশে আসবে । তাই জিম্মাদার সাথীরা যারা বিভিন্ন সময় নাম লিখিয়েছেন, ছোয়াদ হয়েছেন তাদের বুনিয়াদ করে ওলামা হযরতসহ মুনাছেব ভাষা জাননেওয়ালা সাথীদের দ্বারা ৫ মাসের জামাত মোকাম্মাল করে এখন থেকে কাকরাইল পাঠানোর চেষ্টা করা। যারা এরাদা করেছেন বা নাম লিখিয়েছেন এর উপর ক্ষান্ত না হয়ে, এহতেমামের সাথে তাদের সাথে দেখা সাক্ষাত করা, বার বার গাস্ত করা, তার জন্য দোয়া করা, প্রয়োজনে তিন দিনের জামাত পাঠিয়ে তাকে উসুল করার চেষ্টা করা । তার মাসলাকে হাল করার চেষ্টা করা, সালাতুল হাজত পড়া। প্রয়োজনে কার্জে হাসানার এন্তেজাম করা বা সামানা বিক্রয় করে হলেও আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করার চেষ্টা করা। এ ক্ষেত্রে মৌলিক বিষয় হলো মেহনত আমাদের জিম্মায় আর ফলাফল আল্লাহ্ পাকের জিম্মায়। আখিরাতের বড় কামাই মনে করে প্রতিটি জেলা থেকে বাহির মূলকের ৫ মাসের জামাত ও ২ মাসের মাস্তুরাত সহ জামাত তৈরী করে পাঠানো, কমছেকম ৫ দিনের জোড়ে নিয়ে আসার এহতেমাম করলে বহুতি ভালো হয়।
২) ৫ দিনের পুরানোদের জোড়কে কামিয়াব করার জন্য কি করনীয়ঃ
আগামী ২৯ শে নভেম্বর থেকে ৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ পূরানোদের ৫ দিনের জোড়, এই জোড়ের অন্যতম মাকসাদ হচ্ছে দেশের সমস্ত সাল, ৩ চিল্লা ও ১ চিল্লা দেনেওয়ালা ওলামা হাযরাত ও সাল/৩ চিল্লা দেনেওয়ালা সাথিদের মধ্যে-
ক) সিফতের লাইনে আগে বাড়ানো
খ) কুরবানীর লাইনে আগে বাড়ানো এবং
গ) সারা দেশের কাজ একই নেহেজে দাওয়াতের কাজ হওয়া।
এই মাকসাদকে সামনে নিয়ে পুরানোদের জোড়কে কামিয়াব করার জন্য-
(১) জেলা, থানা ও ইউনিয়নের সকল মসজিদে সাল/ ৩ চিল্লা/ ১ চিল্লার ওলামা হাযরাত গণের এবং সাল ৩ চিল্লার সাথীদের লিস্ট হালনাগাদ করা ও তাদের কাছে গাস্ত করে আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করা ও তাদের মোকামী কাজে জোড়ানোর চেষ্টা করা। কমছেকম জেলার সকল পুরানো সাথীরা জোড়ে আসেন, একজনও বাদ না থাকেন।
(২) এই মওকায় জেলার কাম করনেওয়ালা জিম্মাদার সাথীগণ আগামী ২৪ ঘণ্টার জোড় থেকে ৭/১০ দিনের জামাত বানিয়ে থানা/ ইউনিয়ন/ হালকায় এই তাকাজা নিয়ে সফর শুরু করা। একটি ৭/১০ দিনের জামাত দিয়ে আর একটি ৭/১০ দিনের জামাত বের করে এই ভাবে জোড় পর্যন্ত মেহনতের ধারাবাহিকতা চালু রাখা।
(৩) ঢাকার হালকার সাথীরা টেক লাগানো জেলার থানা, ইউনিয়নে ৭/১০ দিনের জামাত নিয়ে যেয়ে অনুরুপ ভাবে মেহনতের এহতেমাম করলে ভালো হয়।
(৪) পুরানো সাথী ও ওলামা হাযরাতগণ যেনারা মাজুর হয়ে গিয়েছেন, তাদের খেদমতে হাজিরী দিয়ে জোড়ের ব্যাপারে ফিকিরমান্দ করা ও দোয়ার মধ্যে লাগানো, তাদের চোখের পানি জোড়কে কামিয়াব করার জন্য অনেক সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ্।
(৫) এখন থেকে থানা, ইউনিয়ন ও মসজিদের মাশওয়ারাতে ও শবগুজারীর মওকায় পুরানোদের জোড়ের আহমিয়াত বুঝায়ে সকল সাথীদের মেহনতের উপর আনার চেষ্টা করা।
(৬) তাছাড়া মাস্তৱাতের ইজতেমায়ী তালিমের মওকায়, বয়ানে ও ঘরের তালিমে মা-বোনদের পুরানোদের জোড়ের আহমিয়াত ও তাকাজা বুঝায়ে ফিকিরমান্দ করা। তারাও যেন এই আলা মাকসাদ কে সামনে নিয়ে প্রত্যেক ঘর থেকে কমপক্ষে একজন পুরুষ আল্লাহর রাস্তায় বের করার কোশেষ করে এবং মা বোনেরা ইনফেরাদী আমল- নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির, রোজা রেখে জোড়ের কামিয়াবীর জন্য দোয়ারও এহতেমাম করেন।
(৭) বড়দের কারগুজারী শোনানোর জন্য কাকরাইল থেকে দেয়া ছকে ১৫/২০ টি (উর্দু ও বাংলা) কপি করে পুরনোদের জোড়ে নিয়ে আসবেন এবং ১ কপি জোড়ের ১০/১৫ দিন পূর্বে কাকরাইলে পাঠালে ভালো হয়।
(৮) যারা জোড় থেকে সময় লাগাবেন এরকম নতুন সাথীদের তাশকিলে পৌঁছিয়ে জামাত বন্দি করে দেয়া। এসব জামাতে যেসব তিন চিল্লার সাথী এবং কম বেশি ওয়াক্ত লাগানো ওলামা হযরতগণ যাবেন তারা জোড় শেষ করে জামাতে যেয়ে জুড়বেন।
(৯) পুরাতনদের জোড়ে জেলার খিত্তার জিম্মাদার সাথীর নাম ইতিমধ্যে মাশওয়ারাতে তায় হয়েছে, অনুরূপভাবে তাশকিল, খিত্তার ও জুড়নেওয়ালী ইত্যাদি জামাত মোকাম্মাল করে বৃহস্পতিবার (২৮ শে নভেম্বর) এর মধ্যে নিয়ে আসলে ভালো হয় যাতে শুক্রবার (২৯ শে নভেম্বর) বাদ ফজর মোজাকারায় শরিক হতে পারেন।
(১০) আমাদের জেলার যে সমস্ত ওলামা হযরতগণ সালে চলছেন তারা জোড়ের মওকায় নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান করবেন বলে ফায়সালা হয়েছে । এই মওকায় জেলার সালে চলনেওয়ালা ওলামা হাযরতদের সঙ্গে পরিচয় হওয়া, হালত মালুম করা ও একরাম করার বিরাট সুযোগ, তাই খিত্তার জিম্মাদার সাথীদের সঙ্গে থাকার জায়গা রাখা ও বিভিন্ন আমলে জুড়ানোর চেষ্টা করলে বহুতি ভালো হয়।
৩) নিজ জেলা পায়দল জামাত চালানোর এহতেমামঃ
নিজ জেলার পায়দল জামাতের দ্বারা পুরানো সাথীদেরকে হরকতে আনা ও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করা বড় মওকা। তাই মুনাসেব সাথীদের দ্বারা, শরায়েত সমূহ মধ্যে নজরে রেখে অধিক পরিমাণে নিজ জেলায় পায়দল জামাত চালানোর এহতেমাম করলে বহুতি ভালো হয়।
৪) বছরের শুরু থেকে মাদ্রাসার মেহনত ও ফারেগীন ওলামা হযরতদের উপর মেহনতঃ
হযরতজী মাওলানা ইলিয়াস সাহেব (রহঃ) বলতেন- ওলামায়ে কেরামদের তায়ীদকে এ কাজের জন্য বড় এহসান মনে করা। তাই কাকরাইল থেকে জামাত পাঠানোর অপেক্ষা না করে, এখন থেকে শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও সাথীদের দ্বারা জামাত বানিয়ে মুহতামিম, নায়েবে মুহতামিম ও নাযেমে তালিমাত হাযরাতদের খেদমতে হাজিরী দিয়ে তোলাবাদের তাশকিল ও তরতীব করার এন্তেজাম করা। ইনশাআল্লাহ্ এইরূপ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে রমজানের খুরুজও বাড়বে । তাছাড়া ফারেগীন ওলামা হাযরাতগণের অভিভাবকদের সাথে দেখা সাক্ষাত করে সালের জন্য তৈরী করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
৫) ছাত্র নওজোয়ানদের উপর মেহনতঃ
ছাত্র নওজোয়ান তবকা একটা বিরাট শক্তি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমান আমি নওজোয়ানদের দ্বারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছি । হিজরতের মওকায় রোজানা পাঁচশত নওজোয়ান মদিনা মনোয়ারায় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এস্তেগবালের জন্য অপেক্ষা করতেন। তাই প্রত্যেক মসজিদওয়ার জামাত ছাত্র নওজোয়ানদের লিস্ট করে মেহনতের তরতীব করা। উমুমী গাস্তের মওকায় ছাত্রদের কাছে খুছুছি গাস্তের জামাত পাঠানো, বছরে শুরুতে ও শেষে ছাত্রদের জোড় করে আল্লাহপাকের রাস্তায় বের করার চেষ্টা করা। তাছাড়া প্রত্যেক জেলার ছাত্র নওজোয়ানদের দেখভালের জামাত নিয়মিত মাশওয়ারায় বসে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিক ইত্যাদি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেহনতের তরতীব করা ও লেখাপড়া শেষে ৪ মাসের জন্য বের করার চেষ্টা করা।
৬) প্রতিটি মসজিদে কামকরনেওয়ালা সাথীদের জিন্দেগীর তরতীব করা ও তরতীব অনুসারে আল্লাহ পাকের রাস্তায় বের করার চেষ্টা করাঃ
আগামী ২৪ ঘন্টার জোড়ে তরগীব দিয়ে প্রতিটি মসজিদে কামকরনেওয়ালা অবশিষ্ট সাথীদেরও সালানা, মাহানা ও রোজানা খুরুজের তরতীব সম্পন্ন করা এবং আজাইমকৃত সাথীদের দিয়ে জামাত বানিয়ে নির্দিষ্ট সময় আল্লাহ পাকের রাস্তায় বের করার কোশেষ করা।
৭) জেলার সকল মসজিদে ৫ কাজ চালু করার মেহনতঃ
যে জেলায়/এলাকায় মসজিদ ওয়ার ৫ কাজ যত মজবুত হবে ঐ এলাকার দ্বীনের কাজ তত মজবুত হবে। তাই হালকা/ ইউনিয়নের লম্বা মাশওয়ারাতে সকল মসজিদের কারগুজারী শুনে সবল মাসজিদকে দুর্বল মসজিদের কাজ উঠানোর দায়িত্ব দেয়া। তাছাড়া কখনও কখনও হালকার মসজিদওয়ার জামাতকে মার্কাজে ডাকা অথবা মার্কাজের জিম্মাদার সাথীরা হালকার জোড়ে গিয়ে মোকামী কাজের কারগুজারী শুনে ৫ কাজের তরগীব ও তরতীব ঢালা।
৮) মাস্তুরাতের মেহনতঃ
আল্লাহ্ পাক ঈমানদার বান্দাদের হুকুম দিয়েছেন নিজেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো ও পরিবার-পরিজনকেও বাঁচাও । তাই মাস্তুরাতের মেহনত অতীব জরুরী। তাদের জেহেন বনলে পুরুষের দ্বীনের কাজের মদদ হবে । তাই প্রতিটি কাম করনেওয়ালা সাথী প্রতি ২ মাস মেহনত করে নতুন জোড়া তৈরী করে ৩য় মাসে মাস্তুরাতসহ তিন দিন লাগানোর এহতেমাম করা। অনুরূপভাবে ১০/১৫ দিন ও চিল্লার জন্য মাস্তুরাতসহ জামাত বের করার চেষ্টা করা। মহল্লার প্রতিটি মসজিদে মাস্তুরাতের সাপ্তাহিক তালিমের মাধ্যমে শতভাগ মুসলমানদের ঘরে তালিম চালু করার চেষ্টা করা।
৯) আন্দুরুনী মূলকের জন্য ৪ মাসের জামাত তৈরীর চেষ্টাঃ
পায়দল জামাত চলার দ্বারা বাতিলের শক্তি, জড় দুর্বল হয় এবং কাজের উমুমি ফেজা বনে, তাই হালকার সবল মসজিদ থেকে অথবা দুর্বল ২/৩ টি মসজিদ মিলে মুস্তাকিল চার মাসের জামাত বের করার চেষ্টা করা।
১০) তাকাজা সমূহঃ
ক. জেলায় বছরে ৪ মাস লাগায় এমন এক মজমা তৈরীর প্রচেষ্টা।
খ. সকল তবকায় (খাওয়াছ, গোরাবা, বধির ইত্যাদি) উপর মেহনত বাড়ানো।
গ. বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত বিদেশী ছাত্রদের উপর মেহনত।
ঘ. কাকরাইলে বিভিন্ন নজমে ৪০ দিনের জন্য সাথী পাঠানোর প্রচেষ্টা।
ঙ. এক মাসের তরতীবে কাকরাইলে মুনাসের সাথী পাঠানোর এহতেমাম।