ত্রি মাসিক মাশওয়ারার ফায়সালা সমূহঃ এপ্রিল ২০২৪
আলমী ফিকির
আল্লাহ্ পাকের ফজলে সারা দুনিয়াতে বাংলাদেশের জামাতের বহুতি তাকাজা রয়েছে, কেননা বাংলাদেশী জামাতের দ্বারা সহীহ মেহনতের তরতীব কায়েম হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ প্রত্যেক জেলায় এসতে'দাদ সম্পন্ন বহু সাথী আছে, এ সমস্ত সাথীদের নিয়ে ৫ মাসের বাহির মূলকের জন্য জামাত বানানো। নতুবা সাথীদের এসতে'দাদ নষ্ট হয়ে যাবে। যে সমস্ত সাথীদের পাসপোর্ট আছে, নেসাব ঠিক আছে এরূপ সাথীদের দ্বারা জামাত বানানোর চেষ্টা করা এবং জামাতে ২/১ জন ভাষা জাননেওয়ালা সাথী থাকা জরুরী।
এই মেহনতকে আমরা গতানুগতিকভাবে না করে হাক্বীকতকে সামনে রেখে করি। হযরত মাওলানা সাঈদ আহমাদ খান সাহেব (রহঃ) বলতেন, “আমরা এই মেহনতের হাক্বীকতকে বুঝি নাই”। এজন্য আমরা আজাইম করি, ফিকির করি ও দৌড়-ঝাপ করি। আমাদের এক একটি হরকতের উপর আল্লাহ্ পাক ফায়সালা করবেন এবং এর দ্বারা আমাদের আখিরাত বনবে। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এই ফিকির নিয়েছিলেন এবং সমস্ত তাকাজাকে পিছনে রেখে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। এজন্য আগামী ১০ দিনের মধ্য পূর্বের সমস্ত ছোয়াদকৃত জামাতগুলো তৈরি করে কাকরাইলে নিয়ে আসার চেষ্টা করা এবং নতুন জামাত বানানোর কোশেশ করলে বহুতি ভাল হয়।
কামকরনেওয়ালা সাথীদের জিন্দেগীর তরতীব
প্রত্যেক কামকরনেওয়ালা সাথীদের জিন্দেগীর তরতীবের (সালানা ও মাহানা খুরুজ তরতীব) মধ্য নিয়ে আসা জরুরী। আর এটা মসজিদওয়ার কাজের মাধ্যমে ওজুদে আসবে। এজন্য আগামী ২৪ ঘন্টার জোড়ে সাথীদেরকে তরগীব দেয়া যাতে করে প্রত্যেক সাথী জিন্দেগীর তরতীব কায়েম করে ও জেলা- হালকা/ইউনিয়ন পর্যায়ে অস্থায়ী মেহনতের জামাত বানিয়ে আজাইমকৃত সাথীদের নির্দিষ্ট সময়ে জামাতসহ আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করার কোশেশ করা ।
মসজিদওয়ার পাঁচ কাজের মেহনত
পুরা দুনিয়াতে দ্বীনকে জিন্দা করার জন্য প্রথমে মসজিদওয়ার কামকে মজবুত করা। হজরতজী (রহঃ) বলেন, “আল্লাহ্ তায়ালা মানুষকে দুই জিনিস দিয়েছেন- ১. কুয়্যাতে ফিকির এবং ২. কুয়্যাতে আমাল”। ফিকির আমলকে ওজুদে আনবে। অল্প সময় দ্বীনের জন্য ফিকির করা ৬০-৭০ বছর নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। তাই মসজিদওয়ার কামকে ওজুদে আনার জন্যঃ
- মসজিদওয়ার জামাতের সকল সাথীরা রোজানা ২.৩০ ঘন্টা সময় লাগানো ।
- প্রত্যেক সাথী ২৭ দিন মেহনত করে নতুন সাথীদের নিয়ে ৩ দিনের জামাতে সময় লাগানো।
- হালকার লম্বা মাশওয়ারার মাধ্যমে সবল মসজিদকে দূর্বল মসজিদের দায়িত্ব দেওয়া।
- গলি-গলি/এলাকা ভাগ করে হার-ঘর হার-ফার্দ এর উপর মেহনতের তরতীব কায়েম করা।
নিজ জেলায় পায়দল জামাত
কাজকে আগে বাড়ানোর জন্য নিজ জেলা পায়দল জামাত চালানো অত্যন্ত জরুরী। এজন্য নিজ জেলায় পায়দল জামাতের শারায়েত সমূহকে মদ্দে নজর রেখে কাসরাতের সাথে প্রত্যেক জেলা থেকে মজবুত জামাত বানিয়ে কাকরাইলে পাঠানোর এহতেমাম করা। যাতে করে থানা ও ইউনিয়নের পুরানো সাথীরা হরকতের উপর আসে।
মাস্তুরাতের মেহনত
মাস্তুরাতের কাজের আহমিয়াত অনেক বেশী। তাদের জেহেন বনলে পুরুষের দ্বীনের কাজে মদদ হবে ও ঘরে দ্বীনি মহল কায়েম হবে তথা তালিম, বাচ্চাদের তরবিয়ত, যিকির, ইবাদত, ফিকির, দাওয়াত এবং জিন্দেগী বানানোর ক্ষেত্রে হুজুর আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাতকে এখতিয়ার করা এবং এগুলোর দ্বারা জিন্দেগী সিরাতের উপর উঠবে।
ফারেগীন ওলামাদের উপর মেহনত
সাল ওয়ালা ওলামায়ে কেরাম আমাদের বিশেষ পুঁজি। উনাদের মাধ্যমে দ্বীনের অনেক তাকাজা পুরা হয়। এজন্য জেলার জিম্মাদার সাথী ও সাল লাগানো ওলামায়ে কেরাম ফারগীন ওলামায়ে কেরামদের লিস্ট বানিয়ে উনাদের উপর এবং উনাদের অভিভাবকদের সাথে দেখা করে আল্লাহ্ পাকের গায়েবী খাজানার উপর ভরসা করে তাদের সালের জন্য তাশকিল করার চেষ্টা করা।
মাদ্রাসার মেহনত
দাওয়াতের এই মেহনত সমস্ত ওলামায়ে কেরামদের কুরবানী ও ফিকিরের ফসল। তাই এলেম ও আহলে এলেমদের আজমত ও মহব্বত দিলে রেখে বছরের শুরু থেকে মাদ্রাসার মেহনতকে আনজাম দেয়া। এই ফিকিরের জন্য প্রতিটি জেলায় অস্থায়ী ভাবে ওলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে জামাত থাকা জরুরী, যারা মাদ্রাসার আসাতেজায়ে কেরাম (তথা মুহতামিম,শায়খুল হাদিস, নাজেমে তালিমাত) ও অভিভাবকদের সাথে সম্পর্ক রেখে তাদের মাতাহাতে ছাত্রদের জেহেন বানিয়ে সাল / চিল্লার জন্য আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করার মেহনত করবেন।
জেলায় প্রতি বছর ৪ মাসের এক মজমা তৈরী করা প্রচেষ্টা
৩ চিল্লা দেনেওয়ালা সাথীরা বছরে ৪ মাস লাগান এরকম এক মজমা তৈরী করার চেষ্টা করা। জেলায় বিভিন্ন মওকায় বছরে ৪ মাস লাগানোর এর উপর জোর তরগীব দেয়া, তাদের আলাদা রেজিস্ট্রার করা, মওকা মহল দেখে মার্কাজে একত্রিত করে ৩ চিল্লার জন্য বের হওয়ার তরতীব ঢালা, ওয়াক্ত ১ চিল্লা করে দিবে নাকি একত্রে দিবে ইত্যাদি ঠিক করা। কতজন বছরে ৪ মাসের তৈরী হল তা আগামী ত্রি মাসিক মাশওয়ারায় কারগুজারী শুনানো।
৪০-৪০ তরতীবে কাকরাইলের নজমে সাথী পাঠানো
কাকরাইল মার্কাজ আমাদের বড়দের কোরবানীর ফসল, এ মার্কাজ সামলানো আমাদের সকলের দায়িত্ব। এজন্য যে সব সাথী বছরে ৪ মাস লাগান, বিভিন্ন নজম সামলানোর যোগ্যতা রাখেন ও জুড়ে মিলে চলতে পারেন; এরূপ মুনাসেব সাথীকে জেলার জিম্মাদার সাথীগণ মাশওয়ারা করে চিঠিসহ কাকরাইল পাঠানোর চেষ্টা করা।
কাকরাইলে এক মাসের তরতীবে সাথী পাঠানো
কাকরাইলে বিভিন্ন নজম সামলাতে পারেন এমন মুনাসেব সাথী জেলার জিম্মাদার সাথীসহ পাঠানোর চেষ্টা করা, যে জেলার জন্য মাস ও সাথী সংখ্যা তায় করা আছে তা পাঠানোর এহতেমাম করা বহুতি জরুরী।
হাজী সাহেবানদের উপর মেহনত
হাজী সাহেবানরা আমাদের প্রতিনিধি। তারা সহীহভাবে হজ্জ করলে আমাদের জন্য রহমত ও বরকত নিয়ে ফিরে আসবেন । এজন্য এখন থেকে খোঁজ খবর নিয়ে এ বছর যারা হজ্জে যাবেন তাদের উপর মেহনত করা। তাছাড়া হজ্জে উনুয়ানের উপর তাশকিল করে জামাত না বানানো।
বিদেশী ছাত্রদের উপর মেহনত
জেলার বিভিন্ন তবকার মধ্যে (গোরাবা, খাওয়াছ, বধির, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবি, আইনজীবি, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ইত্যাদি) মেহনত করতে হুয়ে ছাত্র-নওজোয়ান দেখভালের জামাতের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত বিদেশী ছাত্র ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর মেহনতের তরতীব কায়েম করার চেষ্টা করা ।