দোয়া ও রোনাজারি

১. হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতকে দাওয়াত আর দোয়া এই দুই জিনিস হাতিয়ার হিসেবে দিয়ে গিয়েছেন। উম্মত যতদিন এই দুই জিনিস হাতিয়ার হিসেবে ধরে রেখেছিলো ততদিন কোন শক্তিই উম্মতের কোন ক্ষতি করতে পারেনি।

২. যাবতী মঙ্গল থেকে যেমন দোয়া করতে হবে তেমনি যাবতীয় অমঙ্গল থেকে বাচার জন্যও আমাদের দোয়া করতে হবে। কারন আল্লাহতায়ালার কাছে চাইলে খুশী হন আর না চাইলে নারাজ হন। অপরদিকে মানুষের কাছে চাইলে নারাজ হয় আর না চাইলে খুশি হয়।

৩. হাত তুলে দুয়া করাই জরুরী না। কারন দীলের চাহিদাকেই দোয়া বলে। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাত তুলে খুব কম সময়েই দুয়া করেছেন কিন্তু মাসনুন দুয়া সব হালতেই পাঠ করেছেন।

৪. নবজাতক শিশু যেমন কান্নার দ্বারা তার যাবতীয় জরুরত মিটায় তেমনি আমাদেরও সমস্ত জরুরত কান্নার দ্বারা আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে হাল করে নিতে হবে।

৫. কান্না মানুষের জন্য বিরাট এক হাতিয়ার। আমরা আল্লাহর কাছে কান্না ছেড়ে দিয়েছি বলে আজ মাখলুকের কাছে কানতে বাধ্য হচ্ছি। নবজাতক বাচ্চা কোন ভাষা জানে না। একমাত্র কান্নার দ্বারাই তার সমস্ত জরুরত পুরা করে নিচ্ছে। উলামা একরাম বলেন দুয়ার সময় যদি কান্না না আসে তবে কান্নার ভান করা।

৬. দুয়া ইবাদতের মগজ। সৈনিকের হাতিয়ার যেমন বন্দুক তেমনি মোমিনের হাতিয়ার হলো দোয়া। যার জন্য দুয়ার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে তার জন্য রহমত ও কবুলিয়াতের দরজাও খুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যাকে দুয়া করার তৌফিক দেওয়া হয়েছে বুঝতে হবে তার দুয়া কবুল করা হবে।

৭. দোয়া যেকোন ভাষাতেই করা যায় তবে আরবীতেই হওয়াই মোনাছেব। শেষ রাতের দুয়াই শ্রেষ্ঠ দুয়া। কারণ শেষ রাতে আলাহর রহমত বান্দার নিকটবর্তী হয়। সুখের সময় যারা দুয়া করেন দুঃখের সময় তাদের দুয়া অধিক কবুল হয়ে থাকে।

৮. উলামা একরাম বলেন সাধারনত তিনভাবে বান্দার দুয়া কবুল হয়ে থাকে।
  • যা চাওয়া হয় তা পাওয়া যায়।
  • যা চাওয়া হয় তা না দিয়ে মসিবত সরিয়ে দেন।
  • আখিরাতের জন্য জমা রাখা হয়।
যদি কখনো কোন দুয়া কবুল হতে দেরী হয় তবে অস্থির না হওয়া। কারণ অনেক সময় দেরীতে কবুল হয়। ফেরাউন ধ্বংসের চল্লিশ বছর আগে মুসা আঃ এর দুয়া কবুল হয়েছিলো।

৯. দোয়া কবুলের শর্তঃ
  • কামাই হালাল হওয়া চাই।
  • দাওয়াতের মেহনত করা চাই।
  • দুয়ার শুরুতে ও শেষে দরূদ পড়া চাই।
  • আল্লাহতায়ালার ছিফাতী নামগুলো বলা চাই।
  • নাছোরবান্দা হয়ে দোয়া করা।
  • একীনের সাথে দোয়া করা।
  • প্রথমে নিজের ও পুরা উম্মতের হেদায়েতের জন্য।
  • পরে আত্মীয় স্বজন ও উম্মতের দুনিয়া আখিরাতের মঙ্গলের জন্য।
  • নতজানু হয়ে বসা।
  • হাতের তালু মেলে রাখা।
  • বুক পর্যন্ত হাত উচু রাখা।
  • মধ্যম আওয়াজে করুন স্বরে দুয়া করা।
  • দুয়া শেষে হাত মুখ মন্ডলে বুলিয়ে নেওয়া।

১০. দোয়া কবুলের বিশেষ মূহুর্তগুলোঃ
  • জুমআর রাতে ও দিনে।
  • রমজান মাসে দিনে ও রাতে।
  • হজ্জের দিনে।
  • শেষ রাতে।
  • আজান ও একামতের মাঝে।
  • নামজের পর।
  • কোরআন পাক ক্ষতমের পর।
  • মুসাফির অবস্থায়।
  • অসুস্থ অবস্থায়।
  • আল্লাহর রাস্তায় থাকা অবস্থায় বনী ইসরাইলের নবীদের মতো দুয়া কবুল হয়।
Next Post Previous Post