নামজের গুরুত্ত্বপূর্ণ মাছায়েল
নামজের গুরুত্ত্বপূর্ণ মাছায়েল
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহতায়ালা বলেন "সকল প্রাণধারীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে"। মৃত্যুর পর আখিরাতের জীবনন শুরু হবে যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। কিন্তু ঐ জগতে আমল করার কোন সুযোগ নেই। দুনিয়ার বুকে হায়াতে জিন্দেগীতে যা আমল করবে তার প্রতিদান সেখানে ভোগ করবে। ভালো আমলের বিনিময়ে সুখ শান্তির স্থান জান্নাত পাবে আর খারাপ আমলের বিময়ে দুঃখ কষ্টের স্থান জাহান্নামের আজাব ভোগ করবে। তাই নেক আমল করার জন্য দুনিয়ার বুকে হায়াতে জিন্দেগীকে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর নেক আমল এলেমের সাথে করা জরুরী। হাদীসে আছে এলেমের সাথে অল্প আমলই যথেষ্ঠ। আল্লাহর উপর ঈমান (অর্থাৎ স্বাক্ষী দেয়ে আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই এবং হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহতায়ালার রাসূল।) আনার পর আমলের দিক থেকে সর্বপ্রথম আমল হলো নামাজ। হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন "আল্লাহ জাল্লা শানুহু আমার উম্মতের উপর সর্বপ্রথম নামাজ ফরজ করেছেন এবং কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে।" তাই সমস্ত মুসলমানের জন্য নামাজের মাসায়েলগুলো জানা জরুরী। এখানে মোজাকারার জন্য নামজের গুরুত্ত্বপূর্ন কিছু মাছায়েল আলোচনা করা হলো।
নামজের ফরজ তেরোটিঃ
নামাজের বাহিরে সাত ফরজ (এই ফরজগুলোকে আহকাম বলে)
- শরীর পাক।
- কাপড় পাক।
- নামাজের জায়গা পাক।
- সতর ঢাকা।
- কিবলামুখী হওয়া।
- ওয়াক্ত মতো নামাজ পড়া।
- নামজের নিয়ত করা।
নামাজের ভিতরে ছয় ফরজ (এই ফরজগুলোকে আরকান বলে)
- তাকবীরে তাহরীমা বলা।
- দাড়াইয়া নামজ পড়া।
- ক্বিরআত পড়া।
- রুকু করা।
- দুই সিজদা করা।
- আখেরী বৈঠক।
নামাজের ওয়াজিব চৌদ্দটিঃ
- সূরা ফাতিহা পুরা পড়া।
- সূরা ফাতিহার পর সূরা মিলানো।
- রুকু-সিজদায় দেরী করা।
- রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়া।
- দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা।
- তিন/চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে দুই রাকাত পর প্রথম বৈঠক করা।
- দুই বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া।
- ফরজ নামজের প্রথম দুই রাকাতকে কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা।
- প্রত্যেক রাকাতের ফরজ ও ওয়াজিবগুলোর তরতীব ঠিক রাখা।
- বিতর নামাজে দুয়া কুনুত পড়া।
- দুই ঈদের নামজে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর বলা।
- ইমামের জন্য কেরাত আস্তের জায়গায় আস্তে পড়া এবং জোড়ের জায়গায় জোড়ে পড়া।
- ইমামের অনুসরণ করা।
- সালাম ফিরানো।
নামজে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বারোটিঃ
- তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় দুই হাত উঠানো।
- দুই হাত বাধা।
- ছানা পড়া।
- আউযুবিল্লাহ পুরা পড়া।
- বিসমিল্লাহ পুরা পড়া।
- সূরা ফাতিহার শেষে আমিন বলা।
- প্রত্যেক উঠা বসায় আল্লাহু আকবার বলা।
- রুকুর তাছবীহ পড়া।
- রুকু হতে উঠবার সময় সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ এবং রব্বানা লাকাল হামদ বলা।
- সিজদার তাছবীহ পড়া।
- দরূদ শরীফ পড়া।
- দু'আয় মাছুরাহ পড়া।
নামাজ ভংগের কারন ঊনিশটিঃ
- নামাজে অশুদ্ধ ক্বিরাত পড়া।
- নামাজের ভিতর কথা বলা।
- কোন লোককে সালাম দেওয়া।
- সালামের উত্তর দেওয়া।
- উহ-আহ! শব্দ করা।
- বিনা ওজরে কাশি দেওয়া।
- আমলে কাছির করা।
- বিপদে অথবা বেদনায় শব্দ করে কাদা।
- নামাজের সময় তিন তাছবীহ পরিমান সতর খুলিয়া থাকা।
- সুসংবাদ অথবা দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া।
- (ইমামের জন্য) মুক্তাদী ব্যতীত অপর ব্যাক্তির লোকমা লওয়া।
- নাপাক জায়গায় সিজদাহ করা।
- কিবলা দিক হতে সিনা ঘুরিয়া যাওয়া।
- নামাজে শব্দ করে হাসা।
- নামাজে কুরআন শরীফ দেখে পড়া।
- নামাজে দুনিয়াবী কোন কিছু প্রার্থনা করা।
- হাচির উত্তর দেওয়া।
- নামজে খাওয়া বা পান করা।
- মুক্তাদি ইমামের আগে দাঁড়ানো।